দৈনিক মৌলভীবাজার সোনালী কণ্ঠ নিউজ ডট কম
৪ ওভারে ৩০ রান, উইকেট নেই কোনো। শুধু বোলিং ফিগারটা দেখলে মনে হবে, আইপিএলের পরের অংশের প্রথম ম্যাচে মোস্তাফিজুর রহমান একটা সাদামাটা দিনই কাটিয়েছেন। তবে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে রাজস্থান রয়্যালসের ২ রানের নাটকীয় জয়ে বাংলাদেশ পেসার রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
শেষ ২ ওভারে পাঞ্জাবের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৮ রান, তখনো হাতে ছিল ৮ উইকেট। ১৯তম ওভারে মোস্তাফিজের কাছ থেকে পাঞ্জাব তুলতে পেরেছে ৪ রান, এরপর কার্তিক তিয়াগি এসে করেছেন পাঞ্জাবের শেষ সর্বনাশ। রাজস্থান অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন বলছেন, ম্যাচ জেতার আত্মবিশ্বাস ছিল বলেই মোস্তাফিজকে শেষ পর্যন্ত রেখে দিয়েছিলেন।
মোস্তাফিজ গতকাল করেছেন ইনিংসের প্রথম ওভার। সে ওভারে দিয়েছিলেন ৪ রান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আবারও তাঁকে এনেছিলেন রাজস্থান অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন। মায়াঙ্ক আগারওয়াল সে ওভারে একটা চার মেরেছিলেন, মোস্তাফিজের দ্বিতীয় ওভারে এসেছিল মোট ৮ রান। অবশ্য সে ওভারে পাঞ্জাব অধিনায়ক লোকেশ রাহুলের উইকেটটা পেতে পারতেন মোস্তাফিজ। ফাইন লেগে মোটামুটি সহজ ক্যাচটা ছেড়েছেন চেতন সাকারিয়া। রাহুলের সেটি ছিল তৃতীয় ‘জীবন’।
১৭তম ওভারের আগপর্যন্ত এরপর আর মোস্তাফিজকে আনেননি স্যামসন। আগারওয়াল-রাহুলের পর এইডেন মার্করাম ও নিকোলাস পুরানের জুটি রাজস্থানকে প্রায় ছিটকে দিচ্ছিল লড়াই থেকে। নিজের তৃতীয় ওভারে মোস্তাফিজ গুনলেন ১৪ রান, এর মধ্যে প্রথম ৩ বলেই পুরান তাঁকে চারের পর মেরেছিলেন ছয়। তবে মোস্তাফিজ নিজের সেরাটা জমিয়ে রেখেছিলেন ১৯তম ওভারের জন্যই।
সে ওভারে চারটা ভিন্ন পজিশন থেকে বল ছেড়ে মোস্তাফিজ করলেন চারটা ইয়র্কার। দুবাইয়ের উইকেটে শেষ দিকে বল একটু থেমে আসছিল, বাংলাদেশের পেসার কাজে লাগিয়েছেন সেটাও। উইকেট পেতে পারতেন এবারও, তবে স্যামসন মার্করামের ক্যাচ ফেলায় সেটা হয়নি।
রাহুল-আগারওয়ালের পর পুরান-মার্করামের জুটি যখন জমছিল, তখনো মোস্তাফিজকে আনেননি স্যামসন। ম্যাচ শেষে এর কারণটা ব্যাখ্যা করেছেন রাজস্থান অধিনায়ক, ‘ম্যাচ জিতলে আসলে সব সিদ্ধান্তই সঠিক মনে হয়। আমি সব সময়ই বোলারদের ওপর আস্থা রাখি। শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যেতে চাই। মোস্তাফিজের দুই ওভার রেখে দিয়েছিলাম আসলে এটা ভেবেই, আমরা জিততে পারব ওখান থেকেও।’
নিজেদের ওপর আস্থা ছিল স্যামসনের, ‘কেন জানি আমরা নিজেদের ওপর আস্থা রেখেছিলাম। অন্য কেউই ভাবেনি আমরা জিততে পারব। তবে আমাদের মধ্যে লড়াইয়ের কিছু বাকি ছিল। জানতাম, দুজন স্পেশাল বোলার শেষ দিকে বোলিং করবে আমাদের। মোস্তাফিজুর আর তিয়াগির ওভার রেখে দিয়েছিলাম তাই। ভেবেছিলাম, ক্রিকেটে তো যেকোনো কিছুই হতে পারে। চেষ্টা করে দেখিই না কী হয়!’
এর আগের দুই মৌসুমেও রান তাড়ায় এমন মুঠোয় থাকা জয় ফেলে দিয়েছে পাঞ্জাব। তাদের কোচ অনিল কুম্বলে বলছেন, ১৯তম ওভারেই ম্যাচটা শেষ করতে হতো তাঁদের, ‘আমাদের জন্য এটা (শেষে গিয়ে ম্যাচ হারা) নিয়মিত ঘটনা হয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে দুবাইয়ে। উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার ছিল—১৯তম ওভারে শেষ করতে হবে।’
মোস্তাফিজ সেটা হতে দেননি। কুম্বলের মতে, ম্যাচ শেষ হয়েছে সেখানেই, ‘শেষ পর্যন্ত ম্যাচ না নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য ছিল আমাদের। দুর্ভাগ্যজনকভাবে শেষ দুই বলের জন্য যদি কাজ রেখে দেন, তাহলে আসলে এটা লটারির মতো হয়ে দাঁড়ায়। আর তিয়াগিকেও কৃতিত্ব দিতে হবে, সে যেভাবে বোলিং করেছে।’
শেষ পর্যন্ত স্যামসনের শেষের জন্য মোস্তাফিজদের জমিয়ে রাখার বাজিটা কাজে লেগেছে। অবশ্য
শুরুতে পিচ্ছিল ফিল্ডিং না হলে ম্যাচটা আরও আগেই জিততে পারতেন বলেও জানিয়েছেন তিনি, ‘এ উইকেটে ১৮৫ ভালো স্কোর। আর আমাদের বোলিং-ফিল্ডিংও ভালো। শুরুতেই যদি ক্যাচ না পড়ত ওভাবে, তাহলে ম্যাচটা আরও আগেই জিততে পারতাম আমরা।’
আইপিএলে রাজস্থানের পরের ম্যাচ আগামী শনিবার। আবুধাবিতে ঋষভ পন্তের দিল্লি ক্যাপিটালসের মুখোমুখি হবেন মোস্তাফিজরা।
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
Leave a Reply