কাগিসো রাবাদার খাটো লেংথ বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এলেন ঋষভ পন্ত। এক্সট্রা কাভার দিয়ে বড় শটের চেষ্টা ব্যর্থ হলো, ক্যাচ গেল উইকেটের পেছনে। ৩ বল খেলে শূন্য রানেই ফিরলেন। জোহানেসবার্গে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে ২ ওভারের ব্যবধানে অজিঙ্কা রাহানে ও চেতেশ্বর পূজারা ফিরেছিলেন। দলের অমন পরিস্থিতিতেও কেন এমন করলেন পন্ত? কারণ, পন্তের খেলার ধরনটাই এমন।
পন্ত অমন করে না খেললে কেপটাউনের আজকের ইনিংসটা দেখা হতো না। পন্ত অমন না করলে ব্রিসবেন দেখা যেত না, আহমেদাবাদ আসত না। ইতিহাসের জন্ম হতো না।
কেপটাউনে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতকটা করেছেন আজ পন্ত। ভারতের কোনো উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে এর আগে ৯০ রানের বেশি করতে পারেননি। পন্ত ছয় নম্বরে নেমে ১০০ রান করেছেন, তাঁকে শেষ পর্যন্ত আউট করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। পন্তের হার না মানা শতকের পরও ভারত গুটিয়ে গেছে ১৯৮ রানে—তাঁর ইনিংসের মাহাত্ম্য বলে দেয় বোধ হয় এটিই।
সেটিও যথেষ্ট না হলে পরের তথ্যটা, পন্তের পর ভারতের সর্বোচ্চ ইনিংসটা ২৯ রানের। সেটি করেছেন বিরাট কোহলি। ২৯ রান করতে ভারত অধিনায়ক খেলেছেন ১৪৩ বল। আর পন্ত ১০০ রান করেছেন ১৩৯ বলে।
আজ যখন ক্রিজে নেমেছেন পন্ত, ৫৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়েছে ভারত। মুখোমুখি হওয়া সপ্তম বলে প্রথম স্কোরিং শটটা খেলেছেন পন্ত—রাবাদাকে পুল করে চার মেরে। সেই রাবাদা, যার বলে জোহানেসবার্গে আউট হয়েছিলেন তিনি।
কোহলির সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে যোগ করেছেন ৯৪ রান। সে জুটিতে কোহলির অবদান ১৫ রান, ৭১ রানই করেছেন পন্ত। ভারতের টেল-এন্ডাররা সেভাবে সমর্থন দিতে পারেননি পন্তকে, স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরাই তো এ উইকেটে হাবুডুবু খেয়েছেন।
পন্ত ঠিকই পেয়েছেন শতক। অর্ধশতক পূর্ণ করার সময় স্কয়ারের সামনে থেকেই নিয়েছিলেন ৩৯ রান। বরাবরের মতোই চড়াও হয়েছেন বোলারদের ওপর। কেশব মহারাজকে টানা দুই ছয় মেরেছেন, মার্কো ইয়ানসেনের বলে চেষ্টা করেছেন রিভার্স স্কুপের। ডুয়ান অলিভিয়েরকে এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে খেলেছিলেন একবার, বল সেদিকে গেলেও ব্যাট গিয়েছিল ফাইন লেগের দিকে!
পন্ত দমেননি তাতেও। ৫৮ বলে অর্ধশতকের পর ১৩৩ বলে পূর্ণ করেছেন শতক। ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকা—এ চার দেশেই স্বীকৃত উইকেটকিপার হিসেবে ১০০ করলেন তিনি। ইতিহাসে এমন কীর্তি আছে আর একজনেরই—অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।
শেষ পর্যন্ত মার্কো ইয়ানসেনের বলে যশপ্রীত বুমরা ক্যাচ তুললে থামতে হয়েছে পন্তকে। ফলে ম্যাচে ভারতের ২০টি উইকেটই এসেছে ক্যাচ দিয়ে—ইতিহাসে এমন ঘটেনি এর আগে। দলের ১৯৮ রানের ৫০.৫০ শতাংশ রানই এসেছে পন্তের ব্যাট থেকে। শতকের পর দলের ৫০ শতাংশের বেশি রান করেছেন দেশের বাইরে, ভারত ব্যাটসম্যানদের মধ্যে পন্তের আগে এ কীর্তি আছে চারজনের—ভিভিএস লক্ষণ (সিডনি), বীরেন্দর শেওয়াগ (গল), কপিল দেব (পোর্ট এলিজাবেথ) ও শচীন টেন্ডুলকারের (বার্মিংহাম)।
পন্তের ইনিংসের পর দক্ষিণ আফ্রিকাকে ভারত লক্ষ্য দিয়েছে ২১২ রানের। কেপটাউনে ২০০-এর ওপর রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড আছে তিনটি, যার সর্বশেষটি এসেছিল ২০১১ সালে। দক্ষিণ আফ্রিকা এরপরও জিততেই পারে, জোহানেসবার্গেও তো তারা ভেঙেছিল ভারত-দুর্গ। তবে কেপটাউনে পন্তের এ ইনিংসটা যে স্মরণীয় হয়ে থাকবে—সেটা নিয়ে সন্দেহ নেই নিশ্চয়ই।
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
Leave a Reply