ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পরিবহনকালে রপ্তানি পণ্য চুরির ঘটনা বন্ধ না হওয়ার উদ্বেগ জানিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। তারা বলছে, গত দেড় যুগে বিভিন্ন দেশে রপ্তানির সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুই হাজারের বেশি কাভার্ড ভ্যান থেকে শত শত কোটি টাকার তৈরি পোশাক চুরি হয়েছে। গত বছরও ২০-২২টি চুরির ঘটনা ঘটেছে।
রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএর কার্যালয়ে গতকাল মঙ্গলবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির নেতারা। তাঁরা বলেন, মহাসড়কে পণ্য চুরি তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পণ্য চুরির ঘটনায় একাধিক চক্রকে গ্রেপ্তার করে। তবে চুরির মামলা হওয়ায় তারা ১৫ দিন বা ১ মাসের মধ্যে জামিনে বের হয়ে আসে। এরপর আবারও একই কাজ শুরু করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান। তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির স্বার্থে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পরিবহনকালে পোশাকশিল্পের পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, রপ্তানিমুখী পোশাক চুরির ঘটনা জাতীয় অর্থনীতিতে বেশি প্রভাব ফেলে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে থাকলে বিদেশি ক্রেতারা এ দেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।
সংবাদ সম্মেলনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহসভাপতি এস এম মান্নান, শহীদউল্লাহ আজিম, পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল প্রমুখ।
গত জানুয়ারি মাসের একটি চুরির ঘটনা তুলে ধরে ফারুক হাসান বলেন, ব্রাজিলের একটি ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের রপ্তানিকারককে জানায়, বেশির ভাগ কার্টনের ৩০-৩৫ শতাংশ পোশাক তারা বুঝে পায়নি। ওই চালানে ২৬ হাজারের বেশি পোশাকের মধ্যে ৮ হাজার তারা পায়নি। ঘটনাটি জানানো হলে র্যাব এই চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
চক্রের প্রধান শাহেদের বিরুদ্ধে ১৭-১৮টি মামলা রয়েছে। দুটিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে। দুই দশকের বেশি সময় ধরে শাহেদ এই অপরাধ করে চলেছে। দুই বছর আগে আট মাস কারাগারে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে আবার পুরোনো পেশায় ফিরেছে। এ ধরনের অপরাধ করে কীভাবে জামিন পায়, সেটি আমাদের প্রশ্ন। রপ্তানির পোশাক চুরি বন্ধে মার্চের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ পাঁচ দফা দাবি জানান বিজিএমইএর সভাপতি।
লিখিত বক্তব্যে ফারুক হাসান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সেসব দেশের মানুষ কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছে। তাই পোশাকের ক্রয়াদেশ কমিয়ে দিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। তারা একসঙ্গে বড় ক্রয়াদেশ না দিয়ে ছোট ছোট ভাগ করে ক্রয়াদেশ দিচ্ছে। আবার অনেক ক্রয়াদেশের দাম পরিশোধের সময়সীমাও পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
যদিও চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের পোশাক রপ্তানিতে ১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে ফারুক হাসান বলেন, অপর্যাপ্ত ক্রয়াদেশের কারণে অধিকাংশ কারখানা পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদন চালাতে পারছে না। ওভারটাইমও করানো যাচ্ছে না।
কোনো কোনো কারখানা সপ্তাহে দু-তিন দিন বন্ধ রাখা হচ্ছে। পোশাকের ক্রয়াদেশের বিপরীতে কাঁচামাল আমদানি করতে ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশন (ইউডি) সনদ নেওয়া গত নভেম্বরে ২০ ও ডিসেম্বরে ২৬ শতাংশ কমেছে। তবে আগের চেয়ে বেশি মূল্যের পোশাক উৎপাদন ও কাঁচামালের দাম বাড়তি থাকায় পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশে ধাপে ধাপে সহনীয় পর্যায়ে গ্যাসের দাম বাড়ানোর আহ্বান জানান ফারুক হাসান। তিনি বলেন, যৌক্তিকভাবে দাম বাড়ালে নিত্যপণ্যের দাম সেভাবে বাড়বে না।
জনগণ উপকৃত হবে। শিল্পও উপকৃত হবে। গ্যাস সঞ্চালনে সিস্টেম লস বা অপচয় কমিয়ে আনা, অবৈধ সংযোগ বন্ধ করার ওপরও জোর দেন তিনি।
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Leave a Reply