বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে আজ রোববার সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সকাল ১০টার পর থেকে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া বইতে শুরু করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকাল ছয়টার পর থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। সকাল থেকে আবহাওয়া অনেকটা গুমোট ছিল। এর মধ্যে সকাল ১০টার পর থেকে দমকা বাতাস বইতে শুরু করেছে। এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বেলা দেড়টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে।
এদিকে আজ সকাল থেকে মাতারবাড়ী ও কালারমারছড়া ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে রাস্তাঘাটে লোকসমাগম নেই বললেই চলে। স্থানীয় বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ দেখা গেছে।
উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, এমনিতেই সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছিল, তখন বাতাস ছিল না। অনেকটা গুমোট অবস্থা ছিল। এ কারণে অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন। কিন্তু সকাল ১০টার পর থেকে বৃষ্টির সঙ্গে বাতাস শুরু হওয়ায় মানুষের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
জানতে চাইলে ধলঘাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বলেন, গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঁচ থেকে ছয় হাজার মানুষ এই এলাকা ছেড়ে পার্শ্ববর্তী কালারমারছড়া ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। যাঁরা ইউনিয়নের বাইরে যাননি, তাঁদের মধ্যে চার হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে তুলে দেওয়া হয়। পরে রাতে ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠা লোকজনকে খিচুড়ি ও শুকনা খাবার দেওয়া হয়। তবে সকাল থেকেই অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে ছেড়ে বাড়িতে ফিরে গিয়েছিলেন। এখন যেহেতু বাতাসের গতিবেগ বাড়ছে, তাই এলাকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
কালারমারছড়া ইউপির চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ বলেন, গতকাল শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাঠের বোট দিয়ে পার্শ্ববর্তী ধলঘাট ইউনিয়নের অন্তত পাঁচ হাজার মানুষকে সেখান থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ মানুষ কালারমারছড়া ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে উঠেছেন। যাঁদের আত্মীয়স্বজন নেই, তাঁদের আশ্রয়কেন্দ্রে তুলে দেওয়া হয়েছে।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ইয়াছিন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে একটি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নের ৯৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার মানুষ আশ্রয় নেন। তবে আজ রোববার সকালে কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে থেকে লোকজন চলে গিয়ে তাঁদের আত্মীয়স্বজন বা নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। তবে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা আবার আশ্রয়কেন্দ্রে ফিরে যাচ্ছেন। বেলা একটা পর্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটেনি।
Leave a Reply