জন্মগতভাবেই ডান হাতে সমস্যা মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেনের। কনুই থেকে সরু হয়ে আসা হাতটাতে জোর পান না। সে জন্য প্রিয় খেলা ক্রিকেট খেলা হবে না, তা কি হয়! এমন ইতিবাচক মানসিকতা থেকেই ছোটবেলায় তাঁর বাঁহাতি পেস বোলিংয়ের শুরু। পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমির তাঁর প্রিয় বোলার।
আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে সাজ্জাদের ইনসুইংয়ে চোখ আটকে গেল অনেকেরই। ম্যাচটি জিতেছেও সাজ্জাদের দল বাংলাদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড (বিসিএপিসি)। ইউনিসার্ভ ডিজেবল ক্রিকেট টিম ফর বাংলাদেশকে (ইউডিসিটিবি) ৫৩ রানে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বিসিএপিসি।
টুর্নামেন্টের লিগ পর্বের খেলাগুলো হয়েছে পূর্বাচলের শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। আজ বিকেলে ফাইনাল ম্যাচটি হলো মিরপুরে। এ উপলক্ষে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ক্রিকেটারদের একটা মিলনমেলাই যেন হয়ে গেল। কারও এক পা ভাঙা, কেউ ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না, কারও শরীরের এক পাশ অচল। তবু ব্যাট-বলের সুষম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আনন্দ খুঁজে নিচ্ছেন সবাই। বিজয়ী দলের শাকিল হোসেন তেমনই একজন। একটি সেঞ্চুরি ও একটি ফিফটিতে ২২০ রান করা শাকিল টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
ছোটবেলায় হাঁটতে শেখার সময়ই কুঁচকির চোটে শাকিলের বাঁ পা কিছুটা ছোট হয়ে যায়। ফলে হাঁটাচলার সমস্যা নিয়েই বেড়ে ওঠেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই দৌড়ে রান নেওয়ায় কষ্ট শাকিলের, তাই চার-ছক্কায় দ্রুত রান করাটাই পছন্দ। অন্য ক্রিকেটারদের মতো ঘরোয়া পর্যায়ে ভালো করায় শাকিলের স্বপ্ন এখন জাতীয় দলে খেলা, ‘আমি যেহেতু এখানে ভালো করেছি, আশা করি সামনে বিসিবি আরও সুযোগ করে দেবে। অন্যদের মতো আমরাও এখন জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখতে পারি।’
বিসিএপিসির স্পিনার দ্রুপম পত্রনবিশ সাকিব আল হাসানের বিরাট ভক্ত। জন্মগতভাবে ডান হাতের আঙুলে সমস্যা থাকায় দ্রুপম হয়ে ওঠেন বাঁহাতি স্পিনার। বোলিং করেন অনেকটা সাকিবের অ্যাকশনে, জার্সি নম্বরও ৭৫। ১৭ উইকেট নিয়ে তিনিই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি।
শারীরিক সমস্যা জয় করতে পারার আনন্দ ঝরে পড়ল তাঁর কথায়ও, ‘এই মাঠে খেলা একটা স্বপ্নের মতো ব্যাপার। খুবই ভালো লাগছে। যাঁরা ক্রিকেট খেলেন, তাঁরা অন্তুত একবার এ মাঠে খেলতে চান। আমাদের এখানে কেউই পেশাদার ক্রিকেটার নন। কেউ কেউ হয়তো চাকরি করেন। ছুটি নিয়ে খেলতে এসেছেন। এখন বোর্ড একটা দায়িত্ব নিয়েছে, উইং খুলেছে। সামনে আশা করি আরও বড় কিছু হবে।’
বাংলাদেশের ক্রিকেট এখন যে পর্যায়ে আছে, বড় চিন্তা তো তাঁরা করতেই পারেন! মিরপুরে আজ এই আলোচনাও উঠল। ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেটের বিশ্বকাপ শুরু হলে ক্রিকেট বোর্ডও ভালো দল গড়ার ব্যাপারে আশাবাদী। যাঁরা শারীরিক সীমাবদ্ধতার সঙ্গে লড়াই করে ক্রিকেট খেলছেন, তাঁদের জন্যও বিষয়টি আশাব্যঞ্জক।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার দিতে আসা বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান সে রকম আশ্বাসই দিয়েছেন। বোর্ড সভাপতির সঙ্গে ছিলেন বিসিবির ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেটের প্রধান আকরাম খান, মিডিয়া বিভাগের প্রধান তানভীর আহমেদ ও প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন।
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
Leave a Reply