দৈনিক মৌলভীবাজার সোনালী কণ্ঠ নিউজ ডট কম
আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাজশাহীর বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে নগরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁরা সরকারের দায়িত্বশীলদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে ঘোষণা দেন, ১ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুলে দিলে তাঁরা নগরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এসে আমরণ অনশনে বসবেন।
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী জিন্নাত আরার সঞ্চালনায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বেসরকারি নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ।
লিখিত বক্তব্যে ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, দেশে করোনার সংক্রমণ শুরুর পর গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে দফায় দফায় সবকিছুই খুলেছে। কিন্তু ১৬ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়নি। অজুহাত হিসেবে করোনা সংক্রমণকে বারবার দেখানো হচ্ছে। অথচ লকডাউনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে সরকার কোনো কিছুতেই সফল হতে পারেনি। দেশের সর্বত্র স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে। কারণ, প্রতিটি পরিবারের উপার্জনক্ষম সদস্যকে বাইরে যেতে হয়েছে। এ কারণে শিক্ষার্থীরাও বাড়িতে বসে থাকতে পারেনি। সরকার খাদ্য নিশ্চিত করতে পারেনি।
লিখিত বক্তব্যে ইশতিয়াক আহমেদ আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সরকার অনলাইন শিক্ষার প্রচলন করে এবং দাবি করে, অনলাইন শিক্ষার মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অথচ বাস্তবে সরকারের অনলাইন শিক্ষার নামে সব উদ্যোগ মুখ থুবড়ে পড়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য টিভি চ্যানেল ও রেডিওসহ অন্যান্য সামাজিক প্ল্যাটফর্মে পাঠদানের উদ্যোগ শিক্ষার নামে প্রহসনে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও একই প্রক্রিয়ায় পাঠদান শুরু হয়। কিন্তু অনলাইন ক্লাস-পরীক্ষা কীভাবে মূল শিক্ষার বিকল্প হতে পারে, সে প্রশ্নের উত্তর সরকারের কাছে নেই।
শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিকর নানা রকম অনলাইন গেম-পাবজি, ফ্রি-ফায়ারে আসক্ত হচ্ছেন। এটা আগে কখনো দেখা যায়নি। শিক্ষাকার্যক্রম অব্যাহত না থাকার কারণে ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। অপ্রত্যাশিত বিবাহ প্রকট আকার ধারণ করেছে। অনেক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হয়ে গেছে। শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকে শিক্ষা পেশা বদল করেছেন, অনেকে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
টিকার বিষয়ে তাঁরা বলেন, বহুল আলোচিত টিকা দেশে আসে জানুয়ারিতে। কিন্তু সেটা খুবই কম। এখনো অনেক শিক্ষার্থী টিকার আওতার বাইরে রয়েছেন। তাই টিকা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়টি অবান্তর। কারণ, বাংলাদেশ এখনো টিকার বিষয়ে পুরোটাই পরনির্ভরশীল।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছতলায় শিক্ষকদের ক্লাস নেওয়ার বিষয়ে তাঁরা বলেন, সরকারের ধৃষ্টতায় অতিষ্ঠ হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আ-আল মামুন সশরীরে ক্লাস নেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি পরে ১৬ আগস্ট থেকে ক্লাস নিচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে সংহতি জানিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ক্লাস নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বর্তমানে সব মহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জোর দাবি উঠেছে, কিন্তু সরকার সেগুলোর সামান্যতম বিবেচনায় নিচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা ১৬ মাস ধরে শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে রয়েছেন। তাঁরা
আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আলটিমেটাম দিচ্ছেন। যদি এই সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা না হয়, তবে রাজশাহী বিভাগের শিক্ষার্থীরা রাজশাহী নগরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এসে আমরণ অনশনে বসবেন। অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যহানি বা প্রাণহানির জন্য বাংলাদেশ সরকার দায়ী থাকবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহব্বত হোসেন মিলন, নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জান্নাতুল সাবিরা, নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী নাদিম সিনা প্রমুখ।
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
Leave a Reply