দৈনিক মৌলভীবাজার সোনালী কণ্ঠ নিউজ ডট কম
চার-ছক্কার ফুলঝুরি যদি হয় আপনার টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দেখার প্রধান উদ্দেশ্য, তাহলে মিরপুরে আজ বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি আপনাকে হতাশ করেছে নিশ্চিত। চার-ছক্কার ফুলঝুরি দূরে থাক, রানই হয়নি ম্যাচে!
নিউজিল্যান্ড অলআউট হয়ে গেল মাত্র ৬০ রানে, বাংলাদেশ সেটা ৭ উইকেট ও ৩০ বল হাতে রেখে পেরিয়ে গেল। বাংলাদেশের সমর্থক না হলে তো বটেই, বাংলাদেশের সমর্থকদের অনেকের কাছেও ম্যাচটা ম্যাড়মেড়ে লেগেছে।
তবে ক্রিকেটের পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, এই ম্যাড়মেড়ে ম্যাচই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে একটা রেকর্ড উপহার দিয়েছে। ‘রেকর্ড’টা অবশ্য কতটা গর্ব করার মতো, সে নিয়ে তর্ক চলতে পারে। কী রেকর্ড? দুই দলের ব্যাটসম্যানরা মিলিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে কম স্ট্রাইক রেটের।
কে তো মিরপুরের ধীরগতির পিচ, স্পিনারদের রাজত্ব চলে সেখানে। পাশাপাশি মোস্তাফিজুর রহমানের স্লোয়ার-কাটারও এখানে সবচেয়ে বেশি বিষময়। এ দুইয়ে মিলে নিউজিল্যান্ড শুরুতেই কুপোকাত।
কদিন আগে বাংলাদেশ দল মিরপুরে অস্ট্রেলিয়াকে যেভাবে নাস্তানাবুদ করেছে, সেটি দেখে শিক্ষা নিয়ে আসার দাবি করলেও নিউজিল্যান্ড শিক্ষাটা আজ কাজে লাগাতে পারেনি। মোস্তাফিজ নিলেন তিন উইকেট, নাসুম-সাকিব-সাইফউদ্দিনরা দুটি করে। তাতে নিউজিল্যান্ড ১৬.৫ ওভারেই ৬০ রানে অলআউট, যা টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের যৌথ সর্বনিম্ন ইনিংস।
ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের হয়ে যৌথভাবে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন টম ল্যাথাম ও হেনরি নিকোলস। দুজনই ১৮ রান করেছেন, তাতে ল্যাথাম বল খেলেছেন ২৫টি, নিকোলস ১টি কম। দুজনের স্ট্রাইক রেট ৭০-এর ঘরে। ল্যাথামের ৭২.০০, নিকোলসের ৭৫.০০।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৭০-এর ঘরে স্ট্রাইক রেট ছিল আর শুধু ডগ ব্রেসওয়েলের, ৭ বলে ৫ রান করা ব্রেসওয়েলের স্ট্রাইক রেট ৭১.৪২। পুরো ইনিংসে কারও স্ট্রাইক রেট ৮০-এর ঘরেই যায়নি!
একই অবস্থা তো বাংলাদেশের ইনিংসেও। লক্ষ্য মাত্র ৬১, বাংলাদেশ হয়তো সে কারণেই অত তাড়াহুড়া করেনি। তার ওপর বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটাও ভালো হয়নি। ৭ রানেই দুই ওপেনার নাইম ও লিটন ফিরে যান। এরপর সাকিব ও মুশফিক মিলে ধীরেসুস্থে বাংলাদেশকে লক্ষ্যের কাছে নিয়ে যেতে থাকেন। সাকিব দলকে ৩৭ রানে রেখে যখন আউট হচ্ছেন, তাঁর নামের পাশে ৩৩ বলে ২৫ রান। স্ট্রাইক রেট? ৭৫.৭৫।
সাকিবের পর মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ মিলে বাংলাদেশকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ১৫তম ওভারের শেষ বলে মুশফিকের বাউন্ডারিতে যখন বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হলো, মুশফিকের নামের পাশে ২৬ বলে ১৬ রান। স্ট্রাইক রেট ৬১.৫৩। অন্য প্রান্তে মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ছিলেন ২২ বলে ১৪ রান নিয়ে। স্ট্রাইক রেট ৬৩.৬৩।
দুই ইনিংস মিলিয়ে ম্যাচে একটি ছক্কাও হয়নি। তা পুরো ম্যাচে একটাও ছক্কা না দেখার রেকর্ড তো টি-টোয়েন্টিতে এর আগেও দেখা গেছে ২৬ বার। কিন্তু এভাবে দুই দল মিলিয়ে কোনো ব্যাটসম্যানেরই স্ট্রাইক রেট ৮০-এর ঘরে যাবে না? এমনটা টি-টোয়েন্টিতে আগে কখনো হয়নি!
৮০-ই কেন, দুই দল মিলিয়ে সব ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইক রেট ৯০-এরই নিচে এর আগে কখনো ছিল না।
ক্রিকেট পরিসংখ্যানবিদ কৌস্তভ গুড়িপতি টুইট করেছেন এ নিয়ে, ‘বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড হচ্ছে ছেলেদের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যেখানে কোনো খেলোয়াড়েরই স্ট্রাইক রেট ৯০-এর ওপরে ছিল না। এই ম্যাচে কোনো খেলোয়াড়ের স্ট্রাইক রেট ৮০-এর ওপরেই ছিল না।’
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
Leave a Reply