লিটন দাসের ওপর আজও আস্থা রেখেছিলেন বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। বাংলাদেশের ওপেনারের খেলায় ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত ছিল। কিন্তু ২৩ বলে ২৯ রান করেই থেমেছে তাঁর ইনিংস। তবে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে আজকের ম্যাচেও বাংলাদেশের ব্যাটিং সওয়ার সাকিব আল হাসানের অভিজ্ঞতায়। তাঁর ৩৭ বলে ৪৬ রানের ইনিংস মাসকাটের গরমে বড় ভূমিকা রেখেছ বাংলাদেশের সংগ্রহে। তবে আরও বড় ভূমিকা ছিল অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর। তাঁর ২৭ বলে ৫২ রানের অধিনায়োকোচিত এক ইনিংসের সঙ্গে সাইফউদ্দিনের এক ঝোড়ো ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে পাপুয়া নিউগিনিকে ১৮১ রানের চ্যালেঞ্জ দিয়েছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
শুরুটা আজও ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মোহাম্মদ নাঈম। প্রথম বলেই আউট হতেন, কিন্তু মোরেয়ার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে তাঁর খোঁচা পাপুয়া নিউগিনির উইকেটকিপারের কাছে ঠিকমতো পৌঁছায়নি।
দলের স্কোর শূন্য রেখে নাঈমের ফেরা ধাক্কাই ছিল বাংলাদেশের জন্য। কিন্তু সেটি বড় আঘাত হতে দেননি লিটন দাস ও সাকিব আল হাসান। তাঁরা দুজন ৪১ বলে ৫০ রানের জুটি গড়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। লিটনকে আজ আগের দুই ম্যাচের তুলনায় কিছুটা আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে। সিঙ্গেলস নিয়ে খেলার চেষ্টাটা ছিল তার মধ্যে। স্লগ সুইপ করে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন একটি। কিন্তু তিনি আউট হন সুইপ করেই। বাউয়ের বলে ভালা তাঁর ক্যাচটি ধরেন ডিপ মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে।
সাকিবও খেলেছেন সিঙ্গেলস বের করে। সতীর্থ ব্যাটসম্যানের ডাকেও সারা দেওয়ার ব্যাপারটি ছিল তাঁর মধ্যে। মাসকাটের তীব্র গরমে সিঙ্গেলস বের করা অনেক পরিশ্রমের কাজ। সেটিই করেছেন তিনি, সঙ্গী ব্যাটসম্যানদের নিয়ে। তিনটি ছক্কা মেরেছের সাকিব তাঁর ইনিংসে, বাউন্ডারি নেই একটিও। ৩৭ বলে ৪৬ রান করে ফিরেছেন তিনি ক্লান্তির কাছে হার মেনেই। তবে তাঁর দুর্ভাগ্যও ছিল যথেষ্ট। ভালার বলে লং অফে চার্লস আমিনি যে ক্যাচটি ধরেছেন, সেটি এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেরই অন্যতম সেরা ক্যাচ।
লিটনের ব্যাটিংয়ে আত্মবিশ্বাস কিছুটা ফিরলেও আজও ফর্মে ফিরতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। ৮ বলে ৫ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। হিরির বলে আটাইয়ের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। তবে মাহমুদউল্লাহ ছিলেন বলে রক্ষা। চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা নিয়েই ব্যাটিং করেছেন তিনি। প্রথম থেকেই ছিলেন বেশ আগ্রাসী। তাঁর ফিফটিটি এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত দ্রুততম ফিফটি। তাঁর ইনিংসটি ছিল ২৮ বলে ৫০ রানের। সোপারের বলে মিড উইকেটে রাভুকে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর আউটটি নিয়ে ছোট্ট একটা নাটকই হয়েছে। রাভু ক্যাচ নেওয়ার পর আম্পায়ার নো বল চেক করেছিলেন। জায়ান্ট স্ক্রিনে প্রথমে দেখানো হয়েছিল ‘নটআউট’। সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য ভুল শোধরানো হয়। মাহমুদউল্লাহ তাঁর ইনিংসে মেরেছেন ৩টি বাউন্ডারি ও ৩টি ছক্কা।
বাংলাদেশের ইনিংস আরও বড় হতেই পারত। ১৭.২ ওভারে মাহমুদউল্লাহ আউট হওয়ার পর, সেই ওভারেরই ষষ্ঠ বলে নুরুল হাসান ফিরে যান। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট হারানোর সমস্যাটা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা। আফিফও সেট হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ১৪ বলে ২১ কনরে আউট হয়েছেন তিনি মোয়েরার বলে রাভুর হাতে ক্যাচ দিয়ে। ৩টি বাউন্ডারি মেরেছেন তিনি। তবে এটা বলতেই হবে পাপুয়া নিউগিনির ফিল্ডিং ছিল দুর্দান্ত। ক্যাচগুলোতে ভুল করেননি তারা। বিশেষ করে সাকিব আর আফিফ যে দুটি ক্যাচে ফিরেছেন, সেগুলো ছিল দারুণ। আগেই বলা হয়েছে সাকিব আমিনির যে ক্যাচে ফিরেছেন, সেটি ছিল এ টুর্নামেন্টে এখনো পর্যন্ত সেরা।
সাইফউদ্দিনের কাছ থেকে টি-টোয়েন্টিতে শেষ দিকে দ্রুত ইনিংস চায় বাংলাদেশ। আজ তিনি সেটি উপহার দিয়েছেন। শেষ দিকে তাঁর ৬ বলে ১৯ রানের ইনিংসটিই বাংলাদেশকে পৌঁছে দেয় বড় সংগ্রহে। শেষ ওভারে বাংলাদেশ তুলেছে ২০ রান। এর ১৯ রানই এসেছে সাইফের ব্যাট থেকে।
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
Leave a Reply