1. tarekahmed884@gmail.com : adminsonali :
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন

যোগাযোগ–পরিবহনে নতুন যুগে বাংলাদেশ

  • Update Time : শনিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২১
  • ৪৯৪ Time View

দৈনিক মৌলভীবাজার সোনালী কণ্ঠ নিউজ ডট কম

দেশের যোগাযোগ ও পরিবহন খাতের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বড় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ শেষ হতে যাচ্ছে আগামী বছর। আলোচিত পদ্মা সেতু আগামী জুনের মধ্যে চালু হবে। এর ফলে দেশের আটটি বিভাগই সরাসরি সড়ক যোগাযোগের আওতায় চলে আসবে। ঢাকাবাসী ইতিমধ্যে দেশের প্রথম মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক চলাচল দেখেছে। আগামী বছরের শেষের দিকে এই ট্রেন যাত্রী নিয়ে চলাচল করবে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম পাতালপথও (টানেল) চালুর কথা আগামী বছরের শেষে। বিশেষজ্ঞ মত হচ্ছে, দেশের আলোচিত এসব অবকাঠামো চালু হলে যোগাযোগ ও পরিবহন খাত নতুন যুগে প্রবেশ করবে।

সরকার ১০টি বড় প্রকল্পকে অগ্রাধিকারের তালিকায় (ফাস্ট ট্র্যাক) রেখেছে। এর মধ্যে যোগাযোগ খাতের প্রকল্পগুলো হচ্ছে: পদ্মা সেতু, পদ্মার দুই পারে রেলসংযোগ স্থাপন ও মেট্রোরেল প্রকল্প। কর্ণফুলী টানেল অগ্রাধিকারের তালিকায় না থাকলেও এটি বড় প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত। সরকারের নীতিনির্ধারকেরা মনে করেন, আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে এগুলো চালু করে ভোটে মানুষের মন জয় করার চেষ্টা করবে আওয়ামী লীগ।

এই প্রকল্পগুলোর মধ্যে কর্ণফুলী টানেলের কাজই সময় মেনে এগিয়েছে। এখনো প্রকল্পের ব্যয় বাড়েনি। বাকি দুটি প্রকল্পই নির্ধারিত সময়ের কয়েক গুণ বেশি সময় লাগছে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়েছে তিনবার। পদ্মা সেতুকে ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক ও সেতু নির্মাণে সরকার বিপুল বিনিয়োগ করেছে। সেতুটি সময়মতো চালু হলে মানুষ এর সুফল আগেভাগে পেত। এ ছাড়া যানজট থেকে ঢাকাবাসীকে মুক্ত করার জন্য মেট্রোরেল প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু নির্মাণে সময়ক্ষেপণের কারণে ঢাকাবাসীকে যানজটের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাত বছর ধরে।আশির দশকে দেশের যোগাযোগ খাতে বৃহৎ অবকাঠামো নির্মাণের ধারা শুরু হয়েছিল। গত এক যুগে এই খাতে বিনিয়োগ আরও বেড়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের মতো ‘আইকনিক’ বা নতুন যুগে প্রবেশের স্মারক অবকাঠামোগুলো চালু হওয়ার দ্বারপ্রান্তে।

পদ্মা সেতু এখন পূর্ণতার পথে

পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময় আগামী বছরের জুনে। সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য এখন পিচঢালাই চলছে। এরপর আলোকসজ্জার কাজ করতে হবে। এর বাইরে গ্যাস পাইপলাইন বসানোর কাজ চলমান। গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক কাজের অগ্রগতি ৮৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এর মধ্যে মূল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে ৯৫ শতাংশ।

পদ্মা সেতু নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন হয় ২০০৫ সালে। প্রকল্প নেওয়া হয় ২০০৭ সালে। ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা। কিন্তু নানা জটিলতায় সাত বছর পর মূল সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালে। চার বছরের সময়সীমা ধরা ছিল। কিন্তু সময়মতো বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। এখন পর্যন্ত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। সময়মতো কাজ না হওয়ার পেছনে পদ্মা নদীর অননুমেয় রূপ, বন্যায় ভাঙন, করোনা পরিস্থিতিকে দায়ী করা হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে সেতুর সর্বশেষ স্টিলের কাঠামো বা স্প্যান বসানোর পর মূলত কারিগরিভাবে জটিল কাজ শেষ হয়। যুক্ত হয় মুন্সিগঞ্জের মাওয়া এবং শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্ত।

প্রকল্পের কাজের জটিল প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলতে গিয়ে কর্মকর্তারা বলছেন, এই সেতু ঘিরে তিনটি বিশ্ব রেকর্ড হয়েছে। পদ্মা সেতুর খুঁটির নিচে সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীরে স্টিলের পাইল বসানো হয়েছে। এসব পাইল তিন মিটার ব্যাসার্ধের। বিশ্বে এখনো পর্যন্ত কোনো সেতুর জন্য এত গভীরে পাইলিং প্রয়োজন হয়নি এবং মোটা পাইল বসানো হয়নি। ভূমিকম্প থেকে রক্ষা পেতে এই সেতুতে ‘ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিংয়ের’ সক্ষমতা হচ্ছে ১০ হাজার টন। এখন পর্যন্ত কোনো সেতুতে এমন সক্ষমতার

বিয়ারিং লাগানো হয়নি। রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে টিকে থাকার মতো করে পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে। নদীশাসনে চীনের ঠিকাদার সিনোহাইড্রো করপোরেশনের সঙ্গে ১১০ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি হয়েছে। এর আগে নদীশাসনে এককভাবে এত বড় দরপত্র আর হয়নি।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের শুরু থেকে নানা চ্যালেঞ্জ পার করতে হয়েছে। এখন বড় কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। জুনে চালু হবে ধরে নিয়েই কাজ এগোচ্ছে।

সমীক্ষায় এসেছে, এই সেতু দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯ জেলাকে ঢাকাসহ সারা দেশের সঙ্গে যুক্ত করবে। সেতুটি চালু হলে দেশের জিডিপির হার বাড়াবে ১ দশমিক ২৩ শতাংশ। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়াবে ২ দশমিক ৩ শতাংশ।

পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিবছর কী পরিমাণ যানবাহন চলাচল করবে, তা নিয়ে ২০০৯ সালে একটি বিস্তারিত সমীক্ষা করে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এতে দেখা যায়, ২০২২ সালের শুরুতে যদি পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়, তাহলে ওই বছর প্রতিদিন সেতু দিয়ে চলাচল করবে প্রায় ২৪ হাজার যানবাহন। ২০৫০ সালে যা দাঁড়াবে প্রায় ৬৭ হাজার।

সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হলে পণ্যবাহী যানবাহনের একটা বড় অংশ হবে ভারতের। দেশটির পশ্চিমাংশ থেকে পূর্বাংশে মাল পরিবহন হবে এই পথে। নেপাল ও ভুটানকেও সেতুটি যুক্ত করতে পারবে। এতে আন্তবাণিজ্য বাড়বে।

পদ্মা সেতু চালুর পর এর পূর্ণ সদ্ব্যবহার এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়নে

গত এক দশকে বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেললাইন বসাতে ৩৯ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প চলমান আছে। ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত সেতুর দুই প্রান্তে ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ শেষ হয়েছে। সেতু চালু হলে সড়কপথে এই পথ পাড়ি দিতে ১ ঘণ্টা লাগবে বলে সরকার জানিয়েছে। এখন ফেরিতে পদ্মা পার হতেই ২-৩ ঘণ্টা লাগে।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo    Open photo

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo    Open photo

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo    Open photo

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 SonaliKantha
Theme Customized By BreakingNews