1. tarekahmed884@gmail.com : adminsonali :
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:০২ পূর্বাহ্ন

নিয়ন্ত্রণে ‘সহজ সমাধান’ বন্ধ ঘোষণা

  • Update Time : মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৪৫৫ Time View

দৈনিক মৌলভীবাজার সোনালী কণ্ঠ নিউজ ডট কম

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও কয়েকটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এক মাসের মধ্যে তিনটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা সেগুলোর ছাত্রাবাস বন্ধ করা হয়েছে। এই তিনটি ঘটনার পেছনেই ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক দ্বন্দ্ব, প্রভাব বা নেতা-কর্মীদের ভূমিকা রয়েছে।

এ ছাড়া আবাসিক হলগুলো থেকে অছাত্রদের বিতাড়ন ও হলগুলোতে থাকা ‘গণরুমের’ ব্যবস্থা বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণেই অস্থিরতার ঘটনাগুলো ঘটেছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। কারণ, প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ‘সহজ সমাধান’ হিসেবে আকস্মিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই ছুটি ঘোষণা করছে বা আবাসিক হলগুলো বন্ধ করা হচ্ছে। এতে বেকায়দায় পড়ছেন শিক্ষার্থীরা।

 

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দেখভাল করে। কিন্তু এসব বিষয়ে ইউজিসিও খুব একটা ভূমিকা রাখতে পারছে না। ইউজিসি সচিব ফেরদৌস জামান প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চলে নিজস্ব আইনে। তারা তাৎক্ষণিকভাবে একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট সভা ইত্যাদির মাধ্যমে একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়। পরে ইউজিসিও চিঠি দিয়ে তা জানতে চায়। কিন্তু এখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে এবং কোনো ব্যক্তিবিশেষকে সুযোগ না দিয়ে সবার প্রতি যদি সমান আচরণ করে, তাহলে এগুলো অনেকটাই কমে আসবে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ছাত্রলীগের দ্বন্দ্বসহ বিভিন্ন কারণে গত এক দশকে অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সময়ে অনির্ধারিতভাবে বন্ধ করতে হয়েছে। এই সময়ে বেশ কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী খুন হয়েছেন। সর্বশেষ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অধ্যাপক মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

অধ্যাপক সেলিম হোসেন কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষক ও লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ ছিলেন। গত ৩০ নভেম্বর ক্যাম্পাসের পাশের ভাড়া বাসায় মারা যান।

অভিযোগ উঠেছে, কুয়েটের হলে ডাইনিং ম্যানেজার নিয়োগ নিয়ে ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীর মানসিক নিপীড়নে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ওই দিন বাসায় ফেরার পথে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অধ্যাপক সেলিমকে বিভাগে তাঁর কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর ওপর মানসিক নিপীড়ন চালানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বলছে, এটি হত্যাকাণ্ড। অধ্যাপক সেলিমের পরিবারও এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ করেছে। এই ঘটনায় কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ানসহ ৯ ছাত্রকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। ছাত্র শৃঙ্খলা ও আচরণবিধি ভঙ্গ করার অভিযোগে তাঁদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

কুয়েটের এই ঘটনা নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন ময়মনসিংহে অবস্থিত দেশের অন্যতম বড় কলেজ আনন্দ মোহন কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই উপদলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত শনিবার রাতে আবাসিক হোস্টেলগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এই কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের ইউনিট হিসেবে পরিচালিত হবে—এমন খবরে ক্ষোভ থেকে সংগঠনটির দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এর আগে গত ৩০ অক্টোবর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনায় কলেজটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ। ওই দিন সন্ধ্যার মধ্যেই শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে ২৭ দিন বন্ধের পর খোলা হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক এক মেয়র এবং এক সাংসদের অনুসারী ছাত্রলীগের দুই উপদলের মধ্যেই মারামারির এই ঘটনা ঘটে।

শুধু বন্ধ ঘোষণা নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ক্যাম্পাস ও আবাসিক হলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও বাস্তবায়িত হয়নি। খোলার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হল থেকে অছাত্রদের বিতাড়ন ও হলগুলোতে থাকা গণরুমের ব্যবস্থা বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, শুরু থেকেই অছাত্ররাও হলে উঠেছেন, গণরুম-গেস্টরুমও চলছে আগের মতোই। কিন্তু এসব বন্ধে কর্তৃপক্ষের দৃশ্যমান কোনো ভূমিকা নেই। এর মধ্যেই গত মাসের মাঝামাঝি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের প্রথম বর্ষের দুই ছাত্রী র‌্যাগিংয়ের শিকার হন বলে অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগী দুই ছাত্রীর একজনের অভিযোগ, আপত্তিকর গানের সঙ্গে তাঁদের নাচতে বাধ্য করা হয় এবং মানসিক নির্যাতনও করা হয়।

শিক্ষাবিদেরা বলছেন, দীর্ঘদিনের প্রবণতা হলো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে আবাসিক হলগুলো ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন নিয়ন্ত্রণ করে। নামে প্রশাসন থাকলেও বাস্তবে হলে শিক্ষার্থী ওঠানোর কাজটি করেন ওই ছাত্রসংগঠনের নেতারাই।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, এখন মূল রাজনৈতিক দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা নিজেদের স্বার্থে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেন। যার ফলে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজেদের মধ্যে উপদল তৈরি হয়। এখন ছাত্ররাজনীতি হোক, জাতীয় রাজনীতি হোক অনেকটাই অর্থ, বিত্ত ও পেশিশক্তির অধীনে চলে গেছে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও হাঙ্গামা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ বন্ধ করে এসব সমস্যা সমাধান হবে না। এসব সমাধান করতে হলে যারাই এসব অঘটন ঘটায়, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের আইনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। তারা বিনা বিচারে পার পেয়ে গেলে এসব ঘটনা ঘটতেই থাকবে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপদল সৃষ্টি এবং পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo    Open photo

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo   Open photo

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo   Open photo

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo   Open photo

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo   Open photo

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo   Open photo

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo   Open photo

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo   Open photo

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 SonaliKantha
Theme Customized By BreakingNews