পিএসজির সেরা তারকা এখন কে? নেইমারকে কেন্দ্র করে ভবিষ্যৎ সাজানোর পরিকল্পনা সফল হয়নি ক্লাবটির। তাঁর বদলে কিলিয়ান এমবাপ্পেই গত দুই মৌসুম ধরে ক্লাবকে টানছেন। এ কারণেই নতুন করে পাঁচ বছরের চুক্তিতে অবিশ্বাস্য বেতন দিয়ে তাঁকে ধরে রাখতে চাইছে প্যারিসের ক্লাব। কিন্তু এমবাপ্পেও ক্লাবের সেরা তারকা না। একটি ক্লাবে যখন লিওনেল মেসি নামের কেউ খেলেন, তখন সেটা হওয়ার উপায়ও নেই।
মেসি দলে আছেন যেহেতু, তাঁর প্রশস্তি তো গাইতে হবেই। ক্রীড়া পরিচালক লিওনার্দো সেটাই করলেন। তবে নিজের প্রশস্তিগাথার পক্ষে তাঁর দেওয়া যুক্তি নিয়ে প্রশ্নও উঠতে পারে। লিওনার্দোর দাবি পিএসজিতে মেসির প্রথম চার মাসের সংখ্যা অবিশ্বাস্য।
ফুটবল জগতে বড় নাম হওয়ার আশাতেই ২০১৭ সালে নেইমার-এমবাপ্পেকে টেনে নিয়েছিল পিএসজি। কিন্তু ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বা মেসির বিশাল ভক্তকুলের মতো ভক্ত টানার ক্ষমতা এ দুজনের নেই। এ দুজনকে বহুদিন ধরেই দলে টানার চেষ্টায় অবশেষে সফল হয়েছে ক্লাবটি। এই দলবদলে বার্সেলোনার আর্থিক দুর্দশার ফলে পাওয়া সুযোগটি দুহাত পেতে নিয়েছে পিএসজি। আগেই জমজমাট এক দলবদল কাটানো দলটি মেসিকে দলে টেনে কাগজে-কলমে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দল হয়ে উঠেছে।
সে দল অবশ্য মাঠে এখনো নজর কাড়তে পারেনি। কোচ মরিসিও পচেত্তিনোর ব্যর্থতা হোক, কিংবা সঠিক কৌশলের অভাবই হোক, পিএসজির খেলায় কোনো প্রাণ নেই। ফ্রেঞ্চ লিগে অন্যান্য প্রতিপক্ষের সঙ্গে পিএসজির যোজন যোজন ব্যবধান লিগ টেবিলে কোনো প্রভাব ফেলতে দিচ্ছে না। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে পিএসজির দুর্বলতা ধরা পড়েছে সবার চোখে।
এর পেছনে মেসির দায় নেই। প্রায় প্রতি ম্যাচেই দেখা যায়, মেসি তাঁর পছন্দমতো খেলতে পারছেন না। শুধু এমবাপ্পের সঙ্গেই তাঁর রসায়ন চোখে পড়ছে, বাকিরা মেসির সঙ্গে পাস আদান-প্রদানের কাজটাও ঠিকভাবে করতে পারছেন না। ভাগ্য পক্ষে পাচ্ছেন না। গোলবার বা পোস্টে বল লেগে ফিরছে মাঝে মাঝেই। ফলে পিএসজির ফলে এখনো গোলশিকারি মেসির দেখা মেলেনি। ইউরোপ ওয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে লিওনার্দো বলেছেন, ‘লিও মেসিকে নিয়ে কোনো প্রশ্নই তোলা সম্ভব না। মেসির ব্যাপারে তর্ক করলে, আপনি ফুটবলের ব্যাপারে কিছু জানেন না। তাঁকে নিয়ে কখনো দ্বিধা নেই। মেসির সংখ্যা দেখুন, প্রথম ছয় মাসে (চার মাস) এই সংখ্যা অবিশ্বাস্য। তিনি এবং এমবাপ্পে ক্লাবের প্রায় সব গোলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।’
এ মৌসুমে পিএসজিকে আসলেই টানছেন এমবাপ্পে ও মেসি। দলের ৫৪ গোলের মধ্যে ৪১টিতেই অবদান তাঁদের। ১৫টি গোল করেছেন এবং ১৫টি করিয়েছেন এমবাপ্পে। আর মেসির গোলে অবদান ১১টি। এর মধ্যে সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ৫টি আর মেসি নিজে করেছেন ১টি। ফ্রেঞ্চ লিগে ১০ ম্যাচ খেলে মেসির গোল একটি। ফলে মাঠের খেলায় মেসি আগের মতো দুর্দান্ত হলেও সংখ্যার দিক থেকে মেসি আর যাই হোক অবিশ্বাস্য নন। কারণ, বার্সেলোনার জার্সিতে গত এক দশক ধরেই মৌসুমের এ পর্যায়ে এসে সব প্রতিযোগিতা মিলে অন্তত বিশ বা এর কাছাকাছি গোল থাকত।
পিএসজির খেলা এ মৌসুমে অগোছালো। এর পেছনে অনেকেই মেসি-নেইমার-এমবাপ্পের দায় দেখেন। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা দলের রক্ষণে সাহায্য করেন না। ফলে বাকিদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়, আর এর ফলে দল হিসেবে গোছানো ফুটবল খেলতে পারছে না পিএসজি।
লিওনার্দো অবশ্য এসব অভিযোগ কানেই তুলছেন না, ‘মেসিকে দেখানোর জন্য নিই না আমরা। তাঁকে পেয়ে আমরা আরও শক্তিশালী হয়েছি। যেকোনো ম্যাচ নির্ধারণ করে দিতে পারেন। কে বলেছে, আপনাকে এক ম্যাচে ১২ কিলোমিটার দৌড়াতে হবে? ২০ বছর ধরে একইভাবে খেলছেন তিনি। আপনার পাশে থাকা খেলোয়াড় বদলালে খেলায় তো পরিবর্তন আসবেই। কিন্তু তিনি জিনিয়াস, এ কারণেই মানিয়ে নিতে পারেন এবং দলে আরও জিনিয়াস আছে, যারা তাঁর সঙ্গে মানিয়ে নেবেন। যারা বিশ্বাস করে, সে মাঠে হেঁটে বেড়ায়, তারা বিপদ ডেকে আনছে। ইদ্রিসা গেয়ে যে ম্যাচে ১৫ কিলোমিটার দৌড়ায়, সে–ও কিন্তু মাঝে মাঝে হাঁটে।’
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
Leave a Reply