1. tarekahmed884@gmail.com : adminsonali :
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:২০ পূর্বাহ্ন
Title :
ভিকারুননিসা, মনিপুরের মতো নামী স্কুলও ফলে পিছিয়ে চাল, আলু, বিদ্যুৎ হবে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য, বাদ সিগারেট, স্বীকৃতি নেই পানির এসএসসির ফল কীভাবে দেখবে শিক্ষার্থীরা, নিয়ম জানাল শিক্ষা বোর্ড ভারতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে দেশে কমছে পেঁয়াজের দাম কয়েকটি শর্তে রোববার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১০ দিনে ২০০ কোটি টাকার মুরগি মরেছে ১৫ বছর বয়সী পেসার হাবিবাকে নিয়ে ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ ব্রাজিল থেকে গরু আমদানির পক্ষে ব্যবসায়ীরা, আপত্তি খামারিদের জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি এর অংশ হিসেবে সম্মানিত রোজাদারগণের মধ্যে ইফতার বিতরণ এইচএসসি শুরু হতে পারে ৩০ জুন, ফরম পূরণ ১৬ এপ্রিল থেকে

ভেনামি চিংড়ি কী, বাংলাদেশে এর বাণিজ্যিক চাষের ঝুঁকি কী, লাভ-ক্ষতি কেমন

  • Update Time : সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৩
  • ১৭৪ Time View

দৈনিক মৌলভীবাজার সোনালী কণ্ঠ নিউজ ডট কম

বাংলাদেশে ভেনামি চিংড়ির পরীক্ষামূলক চাষ সফল হওয়ার পর সরকার বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উচ্চ উৎপাদনের সম্ভাবনাময় এ চিংড়ি চাষের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন থেকে ভেনামি চিংড়ি চাষে ইচ্ছুক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরকারের কাছে এ চিংড়ি চাষের অনুমতির জন্য আবেদন করতে পারবে।

দেশে ভেনামির পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয় ২০১৯ সালে। চার বছর ধরে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এ চিংড়ির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিল সরকার। এখন আগ্রহী খামারিদের অবকাঠামো ও অন্যান্য সুবিধা যাচাই-বাছাই করে ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমতি দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে মিলবে এ সুযোগ।

ভেনামি চিংড়ি চাষের বিধিনিষেধ-সংবলিত একটি নির্দেশিকাও অনুমোদন করেছে সরকার।

ভেনামি চিংড়ি আসলে কী

ভেনামি চিংড়ি একটি উচ্চফলনশীল চিংড়ি। এটি পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের একটি চিংড়ি প্রজাতি। উচ্চ ফলনের পাশাপাশি এর রোগ প্রতিরোধক্ষমতার জন্যও এটি এখন সারা বিশ্বে ব্যাপকভাবে চাষ করা হচ্ছে। বর্তমানে পৃথিবীজুড়ে উৎপাদিত চিংড়ির ৮০ শতাংশই ভেনামি জাতের।

ভেনামি চিংড়ির ইংরেজি নাম ‘হোয়াইটলেগ শ্রিম্প’ বা সাদা পায়ের চিংড়ি। এ চিংড়ির শুধু পা দেখতে সাদা এমন নয়, পুরো চিংড়িই দেখতে কিছুটা সাদাটে। অনেকটা স্থানীয় জাতের হরিণা চিংড়ির মতো। ফলে প্রথম দেখায় এ চিংড়িকে হরিণা ভেবে ভুল করেন অনেকে। বর্তমানে চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, একুয়েডর, মেক্সিকো ইত্যাদি দেশে ভেনামি চিংড়ির চাষ হচ্ছে।

ভেনামি চিংড়িকে অন্যান্য চিংড়ির সঙ্গে তুলনা করা হলে এটাকে ফার্মের মুরগির মতো ফার্মের চিংড়ি হিসেবে অভিহিত করা যায়। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ভালো থাকলেও খাদ্যাভ্যাস ও আবহাওয়া বিবেচনায় এ চিংড়ি চাষের ঝুঁকি একটু বেশি। ফলে ভেনামি চিংড়ি চাষ ব্যবস্থাপনায় জৈব নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিতে হয়।

এ চিংড়ি চাষের ক্ষেত্রে পানি ও বর্জ্য শোধন, ভৌত অবকাঠামোর বিচ্ছিন্নতা, বায়ু সঞ্চালন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, রোগের তথ্য সংরক্ষণ, খাদ্য প্রয়োগ—এসব বিষয়ে নজরদারি রাখতে হয়।

ভেনামি চিংড়ির সম্ভাবনা কতটা

মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশের উপকূলবর্তী এলাকায় ২ লাখ ৬ হাজার ৭৬৩ হেক্টর জমিতে চিংড়ি চাষ হয়। এ জমিতে ২০২১-২২ অর্থবছরে বাগদা চিংড়ি উৎপাদন হয়েছিল মাত্র ৭২ হাজার ৮০৯ টন। বর্তমান বিশ্বে উৎপাদিত চিংড়ির ৮০ শতাংশ ভেনামি প্রজাতির হলেও বাংলাদেশে এর উৎপাদন করা যাচ্ছিল না। সরকারি সিদ্ধান্তের ফলে এখন দেশে চিংড়ি উৎপাদন ও রপ্তানি দুটিই বাড়বে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।

দেশের চিংড়িচাষিরা বলছেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ব্ল্যাক টাইগার চিংড়ি, যেটি বাগদা চিংড়ি নামে পরিচিত। সনাতন উপায়ে খামারে চাষ করলে হেক্টরপ্রতি ৪০০ থেকে ৫০০ কেজির মতো বাগদা চিংড়ি উৎপাদন সম্ভব। তবে এ চিংড়ি যদি নিবিড় পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হয়, তাহলে হেক্টরপ্রতি দেড় টন থেকে দুই টন মাছ পাওয়া সম্ভব।

অন্যদিকে, নিবিড় পদ্ধতিতে ভেনামি চিংড়ি চাষ করা হলে হেক্টরপ্রতি ৮ থেকে ১০ টন পর্যন্ত চিংড়ি পাওয়া সম্ভব। তাতে খরচ বাদে বিনিয়োগের ৩০ শতাংশ পর্যন্ত লাভ করা সম্ভব বলে জানাচ্ছেন খামারিরা। তবে উৎপাদন পদ্ধতির ওপর চিংড়ি চাষের লাভ-লোকসান ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সঠিকভাবে ভেনামি চাষ করা গেলে আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে এ খাতে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় দ্বিগুণ হয়ে যাবে। সরকারি নীতিসহায়তা বাড়লে চিংড়ির উৎপাদন ও রপ্তানিতে তার প্রভাব পড়বে।

তবে খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সতর্ক করছেন যে এখনো যেহেতু ভেনামির বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়নি, তাই শুরুর সময়টাতে সাবধানতার সঙ্গে এগোতে হবে। কারণ, দেশের চিংড়ি খামারে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া বা মড়ক লাগার ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটে চলেছে।

আন্তর্জাতিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ফরচুন বিজনেস ইনসাইটের মতে, ২০২৮ সাল নাগাদ বৈশ্বিক চিংড়ির বাজার দাঁড়াবে ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের। এ ক্ষেত্রে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ খাতে বাংলাদেশের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে মাত্র ৫০ কোটি ডলার। তবে অর্থবছরের প্রথম নয় মাস, অর্থাৎ জুলাই-মার্চ সময়ে চিংড়ি রপ্তানিতে আয় কমেছে ২০ শতাংশ।

রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান ক্রিমসন রোজেলা সি ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, উচ্চফলনশীল হওয়ায় ভেনামি চিংড়ির চাষ দেশে স্থানীয় সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি রপ্তানি বৃদ্ধি করে বাংলাদেশকে বিশ্ববাজারের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সহায়তা করবে।

ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমতিকে এ শিল্পের জন্য ইতিবাচক সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী বেলায়েত হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রচলিত যেসব চিংড়ি আমাদের এখানে চাষ করা হচ্ছে, এসব জাত অনেক পুরোনো। চাইলেও উৎপাদন অনেক বাড়ানো সম্ভব নয়। সেই বিবেচনায় ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমোদন ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। এতে উৎপাদন সক্ষমতা বেশ বেড়ে যাবে।’

তবে তিনি মনে করেন, এটা মাথায় রাখতে হবে, সঠিক পদ্ধতি মেনে ভেনামি চিংড়ির উৎপাদনে না করা গেলে, তাতে নানা উত্থান-পতন হতে পারে।

চাষে ঝুঁকি কেমন, কী করতে হবে

ভেনামি চিংড়ি চাষে ঝুঁকি থাকার কারণে সরকারি নির্দেশনায় ভেনামি চিংড়ি চাষ ব্যবস্থাপনায় জৈব নিরাপত্তাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এ চিংড়ি চাষে বায়োসিকিউরিটি নিশ্চিত করতে পানি ও বর্জ্য শোধন, ভৌত অবকাঠামোর বিচ্ছিন্নতা, বায়ু সঞ্চালন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, রোগের তথ্য সংরক্ষণ, খাদ্য প্রয়োগসহ অন্যান্য তথ্যও হালনাগাদ রাখতে হবে।

মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে সনাতন পদ্ধতির বদলে আধা নিবিড় বা নিবিড় পদ্ধতিতে ভেনামি চিংড়ি চাষ করতে হবে। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ এ চিংড়িকে যথাযথভাবে মানসম্মত খাদ্য দিতে হবে। কোনোভাবেই অননুমোদিত অ্যান্টিবায়োটিক, রাসায়নিক বা কীটনাশক প্রয়োগ করা যাবে না। আর বাজারজাত করার ৮ থেকে ১০ দিন আগে চিংড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নিতে হবে।

কোনো কারণে ভেনামি চিংড়িতে রোগ দেখা দিলে মৎস্য অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মৎস্য হ্যাচারি আইন, মৎস্য হ্যাচারি বিধিমালা ও মৎস্য সঙ্গনিরোধ আইন অনুসরণ করে দ্রুত ওই সব সংক্রমিত চিংড়ি ধ্বংস করতে হবে। রোগাক্রান্ত খামার সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত করে আবার উৎপাদনে যেতে হবে।

চাষের অনুমতি পেতে কী করতে হবে

প্রাথমিকভাবে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের চাষিরা ভেনামি চিংড়ি চাষের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে আগ্রহী খামারিদের অবকাঠামো ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থাকতে হবে।

সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, বাণিজ্যিকভাবে ভেনামি চিংড়ি চাষের জন্য বায়োসিকিউরিটি, সঙ্গনিরোধসহ ভৌত অবকাঠামোগত সুবিধা থাকতে হবে। অনুমোদন পেতে আগ্রহী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত ছকে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করতে হবে।

আবেদন জমা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট উপজেলা মৎস্য দপ্তরে। আবেদন জমার পর মাঠপর্যায়ের কমিটি প্রস্তাবিত ভেনামি চিংড়ির খামার সরেজমিনে পরিদর্শন করবে। তারা ১৫ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে সুস্পষ্ট মতামত জানাবে।

নির্দেশিকা অনুযায়ী, ভেনামি চাষের অনুমতি পাওয়ার পরও বেশ কিছু বিধিনিষেধ মানতে হবে, অন্যথায় চাষের অনুমোদন বাতিল করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে অনুমোদিত খামারের নির্বাচিত স্থানের বাইরে ভেনামি চিংড়ি চাষ না করা এবং অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া কোনো পর্যায়ে এ চিংড়ি স্থানান্তর না করা।

এ ছাড়া বিদেশ থেকে আমদানি করা ১৫ দিন বয়সের চিংড়ি পোনা ও ব্রুড চিংড়ি অনুমতিপত্রে উল্লেখিত খামার ছাড়া অন্য কোথাও সরবরাহ না করার ব্যাপারেও বিধিনিষেধ রয়েছে।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

Open photo

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 SonaliKantha
Theme Customized By BreakingNews