রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ ও জীবাশ্ম জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো গত বছর থেকেই ভুগছে। এ অবস্থায় তেল ও গ্যাস উৎপাদন কমানোকে বিপজ্জনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বলেছেন বহুজাতিক তেল কোম্পানি শেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ওয়ায়েল সাওয়ান। তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর অনেক নির্ভরশীল। পুরো বিশ্বের নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল হতে এখনো অনেক সময় প্রয়োজন।’ খবর বিবিসির
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সম্প্রতি বলেছেন, নতুন তেল ও গ্যাস উৎপাদনে বিনিয়োগ করা অর্থনৈতিক ও নৈতিক দিক থেকে পাগলামি। তবে এর সঙ্গে পুরোপুরি দ্বিমত পোষণ করে শেলের সিইও বলেন, তেল–গ্যাসের উৎপাদন কমলে গত বছরের মতো পুরো বিশ্বেই জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে।
বিশ্বব্যাপী নেতারা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি রোধে তেল উৎপাদন ও সবুজায়নের ওপর বিশেষভাবে গুরত্ব দিয়ে আসছেন।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ুবিজ্ঞানী প্রফেসর এমিলি শাকবার্গ বলেন, শেলের মতো সংস্থাগুলোর উচিত পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করার পরিবর্তে পরিবেশ রক্ষা ও সবুজায়নে মনোনিবেশ করা। কারণ, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তেল উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর বড় ভূমিকা রয়েছে।
গত বছর গ্যাসের আন্তর্জাতিক বাজারের ‘নিলাম–যুদ্ধের’ কারণে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) থেকে বঞ্চিত হয়, যার পরিবর্তে উত্তর ইউরোপের দেশগুলো বেশ সুবিধা ভোগ করে। এ রকম পরিস্থিতিতে শেলের সিইও ওয়ায়েল সাওয়ান বলেন, ‘তারা এই দেশগুলোকে এলএনজি ব্যবহার থেকে বঞ্চিত করেছে। ফলে শিশুদের মোমবাতির আলোতে পড়াশোনা করতে হয়েছিল।’
শেল মনে করে, বিশ্ববাজারে দামের সামঞ্জস্য রাখতে তেল উৎপাদনে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। গ্লোবাল সায়েন্স অ্যান্ড পলিসি ইনস্টিটিউটের জলবায়ু বিশ্লেষক ক্লেয়ার ফাইসন বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা যখন জানি যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি পরিবেশবান্ধব, সস্তা ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো; তখন জীবাশ্ম জ্বালানি কিংবা মোমবাতি ব্যবহারের প্রতি আমাদের আসক্তি বাস্তবিক পক্ষে একটি ভুল উপস্থাপনা বৈকি।’
গত বছর ইউরোপীয় কমিশন (ইসি) রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমানো ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউভুক্ত দেশগুলো নবায়নযোগ্য শক্তি স্থানান্তর কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার বিষয়ে একটি রূপরেখা দিয়েছিল। যুক্তরাজ্য আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়নে ১১ দশমিক ৬ বিলিয়ন বা ১ হাজার ১৬০ কোটি পাউন্ড ব্যয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে কোভিড মহামারির মতো অর্থনৈতিক ধাক্কা এই লক্ষ্যকে একটি বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) প্রধান ফাতিহ বিরোল বলেছেন, ‘সরকারগুলো যদি জলবায়ু–সংকটের বিষয়ে আন্তরিক হয় তাহলে এখন থেকে তেল, গ্যাস ও কয়লা উৎপাদনে নতুন কোনো বিনিয়োগ করা যাবে না।’ কিন্তু বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের এখনো নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের মতো অবকাঠামোগত সক্ষমতা নেই।
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
Leave a Reply