গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পাইকারি চিনি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাইকারি বাজারে চিনির দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত তিন দিনে এ বাজারে খোলা চিনির দাম বেড়েছে কেজিতে চার টাকা। পাইকারি বাজারে চিনির দাম এখন ১৩০ টাকা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বুধবার এক প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে, অতিরিক্ত স্বাদ–গন্ধ–রংবিহীন অপরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি টনে ১ হাজার ৫০০ টাকা। অন্যান্য চিনির শুল্ক প্রতি টনে তিন হাজার টাকা। এই করহার কার্যকর হয়েছে, যা ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
এই প্রজ্ঞাপন জারির আগে এক কেজি প্যাকেটজাত চিনির পাইকারি দাম ছিল ১৩১ টাকা, যা এখন ২ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৩৩ টাকা। তবে পাইকারিতে দাম বাড়ার আগেই খুচরা বাজারে খোলা চিনি ১৩৫ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। সরকার আগেই খুচরা বাজারে খোলা চিনি ১৩০ ও প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকায় নির্ধারণ করেছে। কিন্তু সেই দাম বাজারে কার্যকর হয়নি।
মৌলভীবাজারের পাইকারি চিনি ব্যবসায়ী ইয়াসিন স্টোরের শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিল থেকে বাজারে চিনির সরবরাহ কমেছে। ফলে চিনির দাম বাড়তে শুরু করেছে। সরকার শুল্ক কমানোয় আমরা ভেবেছিলাম, চিনির দাম কিছুটা কমতে পারে; কিন্তু উল্টো দাম বাড়ছে।’
এদিকে রাজধানীর মালিবাগ, মগবাজার ও শাহজাহানপুর বাজার ঘুরে জানা গেছে, বাজারে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম আরেক দফা বেড়েছে। প্রতি কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম পড়ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা।
আলুর দাম আগেই বেড়েছে এবং তা প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের গোড়ার দিকেই মোটা ও মাঝারি মানের চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। অন্যদিকে, বাজারে এসেছে বাড়তি দামের আটার প্যাকেট। ২ কেজির এই প্যাকেটের দাম ১২০ টাকা, যা আগে ছিল ১১০ টাকা। এদিকে মসুর ডালের মূল্যবৃদ্ধির পর নতুন করে দাম বেড়েছে মুগ ডালের। ১০০ টাকা কেজির মুগডাল এখন ১২০ টাকা। মানভেদে আরও বেশি দামের মুগ ডালও বাজারে আছে।
শাহজাহানপুর বাজারের ফেনী জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী আজহার উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পেঁয়াজ ও আলুর দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। চাল-আটার দামও কিছুটা বেড়েছে। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তি থাকায় ক্রেতাও কম।
তবে শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে, ফলে দাম একটু কমতির দিকে। কিছুদিন আগেও অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে ৮০ টাকার ওপরে থাকলেও এখন কয়েকটির দাম কমেছে। অবশ্য টমেটো, বরবটি ও শিমের কেজি এখনো ১০০ টাকার বেশি। কিছুটা কমেছে বেগুনের দাম, প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১২০ টাকা।
মাছ, মাংস ও ডিমের বেড়ে যাওয়া দাম এখনো কমেনি। বাদামি রঙের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, আর সোনালি মুরগির কেজি ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা। গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, খাসির মাংস ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে; আর মানভেদে তেলাপিয়া ও পাঙাশের কেজি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।
মালিবাগ বাজারের ক্রেতা আমির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘একেক দিন একেক পণ্যের দাম বাড়ে। বাজারে কোনো নিয়ন্ত্রণ দেখি না। এসব দেখার যেন কেউ নেই। যত ভোগান্তি সাধারণ মানুষের।’
দাম নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার ৩০ অক্টোবর আলু আমদানির অনুমতি দেয়। তিন দিনের মাথায় দেশে আমদানি করা আলু আসতে শুরু করেছে। গতকাল ভারত থেকে আলু এসেছে ৭৭ টন। ভারত থেকে আরও আলু আমদানি করা হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, সরকার এখন পর্যন্ত ১৫৭টি প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৭ হাজার ২১৫ টন আলু আমদানির অনুমতি দিয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের কাছে আরও আবেদন আসছে। এসব আবেদন যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
Leave a Reply