1. tarekahmed884@gmail.com : adminsonali :
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩১ অপরাহ্ন

রোজার আগে চার পণ্যের শুল্ক কমল, দাম কমবে কতটা

  • Update Time : শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৯২ Time View

দৈনিক মৌলভীবাজার সোনালী কণ্ঠ নিউজ ডট কম

রোজার আগে বাজারে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে চাল, চিনি, তেল ও খেজুরের শুল্ক–কর কমিয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর আলাদা প্রজ্ঞাপনে এসব পণ্যের শুল্ক–কর কমানোর ঘোষণা দিয়েছে।

এমন এক সময়ে সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে, যখন বাজারে সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম চড়া। প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ছে। রোজা শুরুর আগেই বেড়ে গেছে খেজুরের দাম। এ অবস্থায় সরকার শুল্ক কমিয়ে পণ্যের দাম কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। গত রোববার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘রমজানে কিছু নিত্যপণ্যের দাম যাতে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে, সে জন্য পাঁচ পণ্যের শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। শুল্ক কমলে তার সুবিধা ভোক্তারা পাবেন বলে আশা করছি।’

শুল্ক কমানোর পর বাজারে এসব পণ্যের দাম কতটা কমবে, সেটিই এখন ভোক্তাদের জানার বিষয়। যদিও বাজারে এসব পণ্যের দাম তাৎক্ষণিকভাবে কমেনি।

বরং দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে গতকাল বিকেলে পাম তেলের দাম লিটারে দেড় টাকা বেড়েছে। সয়াবিন তেল ও চিনির দাম ছিল অপরিবর্তিত। এ ছাড়া চট্টগ্রামের ফলের পাইকারি বাজার স্টেশন রোডের ফলমন্ডিতে খেজুরের দাম অপরিবর্তিত ছিল। দেশে বর্তমানে খুব বেশি চাল আমদানি হয় না, তাই চালের আমদানি শুল্ক কমানোর প্রভাব নেই বাজারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী গত ২৯ জানুয়ারি নিত্যপণ্যের শুল্ক কমানোর নির্দেশ দেওয়ার পর পাইকারি বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম লিটারে চার-পাঁচ টাকা কমেছিল। তাই শুল্ক কমানোর ঘোষণায় নতুন করে আর কোনো প্রভাব পড়েনি।

এদিকে এনবিআর যেসব পণ্যের শুল্ক কমিয়েছে, তাতে হিসাব করে দেখা গেছে, সবচেয়ে কম শুল্ক কমেছে চিনিতে। চিনি আমদানিতে কেজিতে শুল্ক কমবে মাত্র ৭৫ পয়সা। আর সয়াবিন ও পাম তেলে কেজিতে সাত থেকে আট টাকা শুল্ক–কর কমবে। চাল আমদানিতে কেজিতে শুল্ক কমবে সাড়ে ২৩ টাকা। এ ছাড়া কার্টনে আনা সাধারণ মানের খেজুরে কেজিতে শুল্ক কমবে ৩৩ টাকা।

এ বিষয়ে খাতুনগঞ্জের আরএম এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার শাহেদ উল আলম প্রথম আলোকে বলেন, চিনিতে যে শুল্ক কমানো হয়েছে, বাজারে তার কোনো প্রভাব পড়বে না। সয়াবিন ও পাম তেলের দাম কিছুটা কমতে পারে। তবে তা–ও নির্ভর করবে কারখানা থেকে কী দামে তেল সরবরাহ হচ্ছে, তার ওপর।

কোন পণ্যে কত শুল্ক কমল

এনবিআরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে প্রতি টনে আমদানি শুল্ক কমিয়ে এক হাজার টাকা করা হয়েছে, আগে যা ছিল দেড় হাজার টাকা। আর পরিশোধিত চিনি আমদানিতে টনপ্রতি শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে দুই হাজার টাকা, যা আগে ছিল তিন হাজার টাকা। এ সুবিধা মিলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের জানুয়ারির শুল্কায়নের হিসাবে, প্রতি কেজি চিনিতে আমদানিকারকেরা গড়ে শুল্ক–কর দিয়েছেন ৪০ টাকা ৩৫ পয়সা। এখন শুল্ক–করে ছাড় দেওয়া হয়েছে কেজিতে ৭৫ পয়সা। তাতে নতুন করে চিনি আমদানিতে প্রতি কেজিতে আমদানিকারকদের ৩৯ টাকার বেশি কর দিতে হবে।

বাংলাদেশে মূলত অপরিশোধিত চিনি প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাত করা হয়। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে অপরিশোধিত চিনি আমদানি হয় ১৮ লাখ ৪৮ হাজার টন। তাতে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ৪ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা। ভোগ্যপণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয় চিনি থেকে। তাই রাজস্বে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, এমন আশঙ্কায় চিনিতে করভার বেশি কমানো হয়নি বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে।

পরিশোধিত-অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের আমদানি পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করেছে এনবিআর। তাতে প্রতি কেজি অপরিশোধিত সয়াবিনে ৫ টাকা ৬৭ পয়সা করভার কমবে। পাম তেলে কেজিতে করভার কমবে ৪ টাকা ৬৬ পয়সা। তেল আমদানিতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তেলের শুল্কায়ন করে কেজি হিসাবে। তাই শুল্ক কমার হিসাবটি কেজিতে করা হয়েছে। যদিও বাজারে তেল বিক্রি হয় লিটারে। আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট কমানোর পাশাপাশি এই দুই ধরনের তেলে উৎপাদন ও ব্যবসা পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত।

জানতে চাইলে টি কে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতহার প্রথম আলোকে বলেন, উৎপাদন পর্যায়ে কারখানাভেদে কেজিতে তেলে ভ্যাট দেড় থেকে আড়াই টাকা। এ হিসাবে সয়াবিন ও পাম তেলে কেজিতে করভার কমতে পারে সর্বোচ্চ সাত-আট টাকা।

এনবিআর শুল্ককর বেশি কমিয়েছে খেজুরে। রোজার অন্যতম অনুষঙ্গ খেজুর আমদানিতে এত দিন শুল্ক–কর ছিল ৫৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। এর মধ্যে আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ সুবিধা মিলবে আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত। আগের করভার অনুযায়ী, সাধারণ মানের খেজুর আমদানিতে প্রতি কেজিতে করভার ছিল ১৬৪ টাকা। এখন তা ৩৩ টাকা কমবে। গত বছর রোজার আগে খেজুর আমদানিতে করভার ছিল ১০ শতাংশ। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে খেজুর আমদানিতে করভার ও শুল্কায়ন মূল্য বাড়ানো হয়। তাতে খেজুর আমদানি হয়েছে কম।

এ বিষয়ে খেজুর আমদানিকারক ফারুক ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার ফারুক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, আমদানি শুল্ক কমানোর কারণে খুচরা পর্যায়ে খেজুরের দামে কিছুটা প্রভাব পড়বে। আমদানিও বাড়তে পারে।

এনবিআর সেদ্ধ ও আতপ চালের ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। সেই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বা রেগুলেটরি ডিউটি ২৫ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। আগে চাল আমদানিতে কেজিতে করভার ছিল ৩১ টাকা। এখন তা কেজিতে সাড়ে ২৩ টাকা কমবে। করভার বেশি থাকায় চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানি হয়েছে মাত্র ৫৫১ টন। গত অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ১২ লাখ ৮০ হাজার টন চাল।

এনবিআর বলছে, চাল আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যাবে আগামী ১৫ মে পর্যন্ত। তবে এ সুবিধা পেতে আমদানির প্রতিটি চালানের বিপরীতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তার লিখিত অনুমোদন লাগবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 SonaliKantha
Theme Customized By BreakingNews