করোনার (কোভিড–১৯) চিকিৎসায় ব্যবহৃত নকল ভারতীয় জেনেরিক ওষুধে চীনের কালোবাজার সয়লাব হয়ে যাচ্ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
চীনে নতুন করে করোনার সংক্রমণ রেকর্ড সংখ্যায় বেড়ে চলায় অ্যান্টিভাইরাল, বিশেষ করে মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফাইজারের তৈরি প্যাক্সলোভিড ও ভারতের জেনেরিক সংস্করণের ওষুধের চাহিদা বাড়ছে। ঠিক এমন একটি সময় চীনা বিশেষজ্ঞরা এ সতর্কবাণীর কথা জানালেন।
চীনের বাজারে প্যাক্সলোভিডের সরবরাহ কম। আবার, ওষুধটির ওপর সরকারি হাসপাতাল–ক্লিনিকগুলোর কঠোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। এরই মধ্যে চীন দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করে চলা তার ‘জিরো–কোভিড’, তথা শূন্য–করোনা নীতি গত ৭ ডিসেম্বর তুলে নিয়েছে। এ অবস্থায় চীনের ই–কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে সেদেশে করোনা ওষুধের ভারতীয় সংস্করণের বিক্রি ফুলে–ফেঁপে উঠেছে।
২০২০ সাল থেকে ‘শূন্য–করোনা’ নীতির আওতায় চীনে করোনার কঠোর বিধিনিষেধ চলছিল। সম্প্রতি এ বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নামেন অনেক শহরের বাসিন্দারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে বেশির ভাগ বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে চীন সরকার। এ ছাড়াও, করোনায় আক্রান্ত ও মৃত ব্যক্তিদের সংখ্যা প্রকাশ করা বন্ধ করে দিয়েছে দেশটি।
মূলত বিধিনিষেধ শিথিল করার পর থেকে চীনে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন। সেই সঙ্গে বেড়েছে করোনায় মৃতের সংখ্যাও। দেশটির বিভিন্ন শহরের শ্মশানগুলো ব্যস্ত হয়ে পড়েছে করোনায় মৃতদের সৎকারে। এমন শোচনীয় পরিস্থিতির মধ্যেই করোনার ভারতীয় নকল ওষুধ প্রবেশ করেছে চীনের বাজারে। কেননা, করোনা প্রতিরোধে চীনারা হন্যে হয়ে ওষুধ খুঁজছে।
এ বিষয়ে চীনের সংবাদমাধ্যম সিক্সথ টোন–এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একদিকে করোনা বাড়ছে, অন্যদিকে করোনার ভারতীয় নকল ওষুধে চীনের বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে করোনার বিস্তার ঘিরে নতুন করে সংকটে পড়তে পারে চীনের জনস্বাস্থ্য খাত। সম্ভাব্য এ সংকট নিয়ে ইতিমধ্যে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ওই প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, চীনের কালোবাজারে প্যাক্সলোভিডের একেকটি বাক্স প্রায় ৫০ হাজার ইউয়ান বা ৭ হাজার ২০০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। ভারতে উৎপাদিত এ ওষুধটির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, চীনের বাজারে যেসব প্যাক্সলোভিড পাওয়া যাচ্ছে, তার বেশিরভাগই নকল।
তবে এই নকল ওষুধ স্বাস্থ্যের জন্য কী ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে সেটা এখনো অজানা। এমনকি কোনো রোগীর ক্ষতি হয়েছে, এমন প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, নকল ওষুধ ভাইরাস প্রতিরোধে অকার্যকর। তাই এটা বিপদের কারণ হতে পারে। এসব নকল ওষুধ খাওয়ার ফলে রোগীর চিকিত্সা ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে। চীন সরকার ২০১৯ সালে বিদেশ থেকে ওষুধ আমদানিতে বিদ্যমান বিধিনিষেধ শিথীল করে। মূলত এর পরই ভারত থেকে ক্যানসারের ওষুধসহ অননুমোদিত বিভিন্ন ওষুধ চীনের বাজারে প্রবেশ করে। তবে করোনা মহামারি শুরুর পর পরিবহণ সংকটের জেরে এসব ওষুধের চালান কিছুটা কমেছিল। এখন আবার বেড়েছে।
এ বিষয়ে বেইজিং মেমোরিয়াল ফার্মাসিউটিক্যালের প্রধান হি জিয়াওবিং বলেন, ভারত একমাত্র দেশ যেখান থেকে আমরা সহজে, কম খরচে ও নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে করোনার ওষুধ আনতে পারি। তবে হঠাৎ করে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অসাধু চক্রগুলো সুযোগ নিচ্ছে। নকল ওষুধ এনে বাজারে ছাড়ছে। এতে বিপদে পড়বেন রোগীরা।
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন
Leave a Reply